রামেকের বিদেশী শিক্ষার্থী রাউধার গলায় ফাঁসের দাগ

প্রথম প্রকাশঃ এপ্রিল ১, ২০১৭ সময়ঃ ৯:৩১ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ২:৩৯ অপরাহ্ণ

রাজশাহী প্রতিনিধি:

মালদ্বীপের রাউধা আতিফের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। রাউধা রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল।

শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) মর্গে তার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়।

এর আগে ময়নাতদন্ত করতে রামেকের পক্ষ থেকে তিন সদস্যবিশিষ্ট টিম গঠন করা হয়। রামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মনসুর রহমানকে প্রধান করে এ টিম গঠন করা হয়। অন্য সদস্যরা হলেন ফরেনসিক বিভাগের সাবেক প্রধান ডা. এমদাদুল হক ও বর্তমান সহকারী অধ্যাপক ডা. এনামুল হক।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) উপকমিশনার (সদর) তানভীর হায়দার চৌধুরী বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত আইশা শান শাকির ও রাউধার বাবা মোহাম্মদ আতিফ পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে রাউধার লাশের ময়নাতদন্তের অনুমতি দেন তার বাবা।

রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে টিমের প্রধান ডা. মনসুর রহমান জানান, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। এরপর লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তে প্রাথমিকভাবে কী পাওয়া গেছে, তা বলেলনি তিনি।

ময়নাতদন্ত টিমের সদস্য ডা. এনামুল হক বলেন, রাউধার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে গলায় ফাঁস দেওয়ার দাগ রয়েছে। এতেই তার মৃত্যু হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে রাউধার শরীরে কোনো পয়জন (বিষ) গেছে কিনা, তা নিশ্চিত হতে লাশের ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়েছে। ভিসেরা প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে।

নগরীর শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, ময়নাতদন্তের পর মর্গ থেকে লাশ নিয়ে রামেকের হিমঘরে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত ও রাউধার পরিবারের সদস্যরা আরএমপি কমিশনারের সঙ্গে তার কার্যালয়ে বৈঠক করেন।

পুলিশ জানায়, নিহত রাউধার পরিবারের সদস্যরা তাকে রাজশাহীতে দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে হেতমখাঁ কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

গত বুধবার দুপুরে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রী হোস্টেলের ২০৯ নম্বর কক্ষ থেকে এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাউধা আতিফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। রাউধার বাড়ি মালদ্বীপের মালেতে। তার বাবা মোহাম্মদ আতিফ পেশায় একজন চিকিৎসক। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছিল, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে কাপড় বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে রাউধা আত্মাহত্যা করেন।

২০ বছর বয়সের আন্তর্জাতিক মডেল তারকা রাউধা মালদ্বীপের নাগরিক। গত বছরের ২২ অক্টোবর প্রকাশিত খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক ফ্যাশন পত্রিকা ‘ভোগ ইন্ডিয়া’র নবম বর্ষপূর্তি সংখ্যার প্রচ্ছদে মডেল হিসেবে তার ছবি ছাপা হয়। নীল নয়না হওয়ায় মডেল তারকা হিসেবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি পান রাউধা। জানা গেছে, রাউধা একসময় প্রখ্যাত ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনের মডেল হয়েছিলেন শখের বসে। শিক্ষার টানে মালদ্বীপ থেকে বাংলাদেশের রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। রাউধা আতিফের মডেলিংয়ের কিছু ছবি তার ফেসবুক প্রোফাইলে দেখা যায়। তবে বৃহস্পতিবার থেকে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

প্রতিক্ষণ/এডি/তাআ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G